ইমিগ্রেশন নিউজ : দিনমজুর বাবার আয়ে সংসার চলছিল জোড়াতালি দিয়ে। অভাব যেন পিছু ছাড়ছিল না। ভাগ্য ফেরাতে এক বুক আশা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার পাড়ি জমান তরুণ আল আমিন। কিন্তু সুখ আর ফিরল কই? কাতারের দোহায় গত ৪ মার্চ গভীর খাদে কাজ করার সময় পাইপের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে আল আমিনের।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে লেখা হয়ে গেল এপিটাফ। আল আমিনের বাড়ি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার কবাখালী মুসলিমপাড়া গ্রামে। ছেলের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকে মা মনোয়ারা বেগমের বিলাপ যেন থামছেই না । আর্তনাদ করছেন ছেলের ছবি বুকে নিয়ে। প্রতিদিন ভিডিও কলে মাকে দেখতেন আল আমিন। সেই ছেলে এখন কেবল ছবি। তা মানতেই চাইছে না মায়ের মন।
জানা যায়, আল আমিনের বাবা মনু মিয়া দিন মজুরি করেন। অভাবে সংসারের দুঃখ দূর করার জন্য চার লাখ টাকা ঋণ করে ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি কাতার গিয়েছিলেন। ঋণ শোধ করার জন্য কাতার গিয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার টাকাও পাঠিয়েছিল। ছোট দুই ভাইবোনকে কলেজে পড়াশোনা করাচ্ছেন। কিন্তু মুহূর্তেই সব তছনছ হয়ে গেল।দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে আল আমিন ছিল সবার বড়। তিনি কাতারের দোহায় একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।
মৃত্যুর দিন প্রতিষ্ঠানের একটি প্রকল্পে গভীর খাদে পাইপ বসানোর কাজ করছিলেন তিনি। সেখানে পাঁচ টন ওজনের একটি পাইপের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আল আমিনকে বিদেশে পাঠাতে করা ঋণ এখনো শোধ হয়নি। ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারটি। অপেক্ষা এখন লাশের। ছেলেকে শেষ বারের মতো একবার ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা মায়ের।